প্রকাশিত : ২৩ আগস্ট, ২০১৯ ১৭:১৭

আসমা ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আসমা ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে বলাকা কমিউটার ট্রেনের পরিত্যক্ত বগি থেকে উদ্ধার হওয়া মাদ্রাসা ছাত্রী আসমা আক্তারকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যা মামলার সন্দেহভাজন প্রধান আসামী মারুফ হাসান বাধনকে (২০) আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বাধনকে আটকের দাবি পুলিশের।  তবে কোথা থেকে আটক করা হয়েছে তা জানাতে অপারগতা জানায় পঞ্চগড় থানা কর্তৃপক্ষ। আটক বাধন পঞ্চগড় সদর উপজেলার সীতাগ্রামের আবু হানিফ ওরফে ভুট্টোর ছেলে। শুক্রবার বিকেলে তাকে ঢাকার কমলাপুর জিআরপি থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

এদিকে আসমাকে ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে পঞ্চগড় জেলা শহরের শহীদ মিনারের সামনে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের ধারে ঘন্টাব্যাপি ওই কর্মসূচি পালন করা হয়।

পঞ্চগড়ের সামাজিক সংগঠন ‘বাঁচাও পঞ্চগড়’ আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্বাস আলী, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক এমরান আল আমিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজল, পঞ্চগড় নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এরশাদ হোসেন সরকার, জেলা পরিষদ সদস্য ও নারী নেত্রী আকতারুন নাহার সাকী, জেলা জাতীয় পার্র্টির সাধারণ সম্পাদক আবু সালেক, ‘বাচাও পঞ্চগড়’ এর ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক ও পঞ্চগড় প্রেসকাবের সভাপতি সফিকুল আলম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী একেএম আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম শহীদ, মামলার বাদী আসমার চাচা মো. রাজু, স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান সাবুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দগণ বক্তব্য দেন। মানববন্ধনে আসমার বাবা মা আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকার সকল শ্রেণি পেশার নারী পুরুষ, আসমার সহপাঠি শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। আসমার বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ের মত যেন আর কারো সন্তানের এমন না হয়। তিনি মেয়ের ধর্ষণ ও হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবি জানান।’

উল্লেখ্য, গত ১৮ আগষ্ট রোববার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কনপাড়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে মাদ্রাসা ছাত্রী আসমা আক্তার (১৭)। রাতে আর বাড়িতে ফিরেনি সে। পরদিন ১৯ আগষ্ট সোমবার সকালে আসমার পরিবারের লোকজন পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারে আসমার লাশ ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে একটি ট্রেনের পরিত্যক্ত বগির শৌচাগারে পাওয়া গেছে।

নিহত আসমার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই পাশ্ববর্তী সীতাগ্রামের হানিফ ইসলাম ভুট্টোর ছেলে মারুফ হাসান বাধনের (২০) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আসমার। তার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেই বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিল আসমা। বাধনই তাকে ঢাকায় পালিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বলে দাবি আসমার বাবা-মায়ের।

এ ঘটনায় ১৯ আগষ্ট সোমবার ঢাকা রেলওয়ে (কমলাপুর) থানায় নিহত আসমা আক্তারের চাচা মো. রাজু (ঢাকায় একটি কোম্পানীর গাড়ি চালক) অভিযুক্ত মারুফ হাসান বাধন (১৭) কে আসামী একটি মামলা দায়ের করেছেন। পরে নিহতের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিকেলে নিহতের চাচা মো. রাজুর কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। গত বুধবার সকাল ১১টায় তার বাড়ির পাশে শিংপাড়া গোরস্থানে জানাযা শেষে আসমার মরদেহ দাফন করা হয়।

 

উপরে