সৈয়দপুরে কয়াগোলাহাট বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও আলোচনা সভা

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৩ জুনের গণহত্যা দিবসে শহরের কয়াগোলাহাট বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ’৭১ এর পাকবাহিনীর পরিকল্পিত গণহত্যায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করা আমরা ’৭১ নামের একটি সংগঠন পক্ষ থেকে ওই সব কর্মসূচি করা হয়।
সকাল সাড়ে ১০টায় কয়াগোলাহাট বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আমরা ’৭১ এর প্রধান সমন্বয়ক ও লেখক বীরমুক্তিযোদ্ধা হিলাল ফয়েজী।
কুড়িগ্রামে অবস্থিত উত্তরবঙ্গের জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা এডভোকেট র্আরাহাম লিংকনের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন আমরা ’৭১ এর সমন্বয়ক ও বাসসের বিশেষ সংবাদদাতা মাহফুদা জেসমিন, জেনোসাইড বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রামের শহীদ সন্তান প্রদীপ কুমার দত্ত, কুড়িগ্রাম জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি জ্যোতি আহমেদ, কয়াগোলাহাট ট্রেনের গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী তপন কুমার দাস, মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সন্তান সাংবাদিক এম আর আলম ঝন্টু প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে আমরা ৭১ এর প্রধান সমন্বয়ক লেখক বীরমুক্তিযোদ্ধা হিলাল ফয়েজী বলেন, কয়াগোলাহাট বধ্যভূমিটি হচ্ছে ’৭১ এর নির্মমতার চরম সাক্ষী। সৈয়দপুর শহরে বসবাসকারী হিন্দু ও মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের মানুষজনকে একটি ট্রেনে তুলে নিরাপদে ভারতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে কয়াগোলাহাট এলাকায় নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সংগঠন জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য দেশে-বিদেশে কাজ করছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়কে উদ্দেশ্য করে বলেন, ত্রিশ লাখ শহীদের নাম তালিকাভূক্ত করতে দ্রুত কাজ করতে হবে। সৈয়দপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য শহীদ ডা. জিকরুল হকের নামে সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামকরণের দাবি জানান তিনি।
এর আগে আমরা ’৭১এবং উত্তরবঙ্গ যাদুঘরের পক্ষ থেকে কয়াগোলাহাট বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। পরে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীবরতা পালন করা হয়েছে।
পরে সংগঠনের সদস্যরা দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় শহীদদের স্মরণে স্থাপিত অদম্য স্বাধীনতায় পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
এছাড়াও শহীদ পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে কয়াগোলাহাট বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ, মোমবাতি প্রজ্বালন, পূজা-অর্চনা ও খিঁচুরি বিতরণ করা হয়েছে
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৩ জুন সৈয়দপুর শহরের সংখ্যা লঘু হিন্দু ও মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের লোকজনদের নিরাপদে ভারতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে একটি বিশেষ ট্টেনে তুলে নেয়া হয়। পরে তাদের শহরের কয়াগোলাহাট এলাকায় ট্টেনটি থামিয়ে হিন্দু ও মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের ৪৪৮ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে ট্রেনের মধ্যে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।